• বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৫:৪৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতিদিন ২–২.৫ কোটি টাকার চাঁদাবাজি: শ্রম উপদেষ্টা মাত্র ৯দিনে চবি ভর্তি পরীক্ষার আবেদন লাখ ছাড়িয়েছে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকায় অবতরণ করছে না, অনিশ্চিত খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রা স্বামীকে নিয়ে চিরকুট লিখে গৃহবধূর আত্মহত্যা সাংস্কৃতিক শক্তিতে বদলে যেতে পারে কক্সবাজারের পর্যটন চট্টগ্রামে পেঁয়াজের বাজারে নেমেছে স্বস্তির হাওয়া, তবে ব্যবসায়ীরা শঙ্কায় এক স্থলবন্দর দিয়েই এসেছে ৬০ টন পেঁয়াজ চট্টগ্রামের ‘ক্যান্ডি’র স্বাদের জিলাপির সিরায় ভাসছিল মাছি–মশা চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে বিএনপির কঠোর হুশিয়ারি এনসিপির সঙ্গে জোটে গেলো এবি পার্টি ও রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন

নবীজির জীবন: মানবতার অনন্ত দিশারি

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৪৩
শুক্রবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
images 1

আরবি সনের তাৎপর্যবাহী রবিউল আউয়ালের ১২ তারিখ দিনটি শুধু একটি ধর্মীয় স্মরণ নয়, বরং শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও ন্যায়ের চিরন্তন আহ্বান।  বিশ্ব শান্তির অগ্রদূত, মানবজগতের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব, ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক, মক্কার জিইয়ে পড়া ঘাসগুলো ও যার হাতে ফিরে পেয়েছিলো নতুন প্রাণোচ্ছ্বাস সেই মহান মানবতার কল্যাণের বার্তাপ্রেরক হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সা.)-এর জন্ম ও ওফাতের দিন হিসেবে নানান জায়গায় উল্লেখ থাকায় এই তারিখকে মুসলিম উম্মাহ পালন করে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) হিসেবে।
“মিলাদুন্নবী” (মাওলিদুন্নবী / ঈদে মিলাদুন্নবী) শব্দটির অর্থ হলো-
“মিলাদ” (مِيلاد) আরবি শব্দ, যার অর্থ জন্ম বা আবির্ভাব।
“নবী” (النبي) মানে হলো নবী বা রাসূল।
“মিলাদুন্নবী” অর্থ দাঁড়ায় — “নবীর জন্ম” বা “নবীজির জন্মদিন”।

ইতিহাসের আলোয় এক দিন:

গবেষণার নিমিত্তে পাওয়া যায় ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ ই রবিউল আউয়াল অর্থ্যাৎ ‘আমুল ফিল’ বা হাতির বছরে আরবের পবিত্র মক্কা নগরীর সুপরিচিত কুরাইশ বংশে জন্ম নেন মানবতার কল্যাণের বার্তাবাহি সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হযরত মুহাম্মদ (সা.)। মানবজাতিকে বিভ্রান্তির আঁধার থেকে মুক্ত করে সত্য ও শান্তির পথে পরিচালিত করাই ছিল তাঁর সৃষ্টি ও আবির্ভাব এর একমাত্র উদ্দেশ্য । পরবর্তীতে একই দিনে তাঁর ইন্তেকাল হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় এ দিনটি আনন্দের পাশাপাশি গভীর আবেগ ও শোকেরও প্রতীক হয়ে ওঠে।

“আমি তো প্রেরিত হয়েছি মানবতার কল্যাণ সাধনের জন্য।” —হযরত মুহাম্মদ (সা.)।

তাৎপর্য ও বার্তা:

ইসলাম ধর্ম শান্তির ধর্ম। এই সুনির্দিষ্ট জীবনব্যাবস্থা স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক প্রদানকৃত হয় মহানবী হযরত মোহাম্মদ (স:) এর মাধ্যমে। মানবতার বিপর্যয় আনায়াসে কাটতে শুরু করা এবং একসময় একটি পুর্নাঙ্গ জীবনব্যাবস্থায় শান্তিতে দিনাতিপাত করা প্রত্যোক মানুষের জন্য বয়ে নিয়ে আসে আমুল শান্তির ছোয়া। আর পৃথিবী হয়ে উঠে শান্তির নীড়।আর সেই মহানব্যাক্তির জন্ম ও ওফাত দিবস কে ঘিরে এই তারিখের তুমুল তাৎপর্য আনায়াসে স্বীকার করা যায়।
নবী করিম (স:) এর জীবনী পড়া ও অনুসরণের মাধ্যমে আত্মশুদ্ধি হোক এই তারিখ স্মৃতিচারণ এর অন্যতম উপায়।
শান্তি ও সমৃদ্ধির পথকে অন্তরে ধারণ এর চর্চা হোক।
সামাজিক অসঙ্গতি ও বৈষম্য দূরীকরণের দীক্ষা ছড়িয়ে দেওয়া হোক সর্বক্ষেত্রে।

শিক্ষা হোক প্রজন্মকে ইতিহাস ও সত্যপথের সঙ্গে পরিচিত করা।

বাংলাদেশে উদযাপন:

বাংলাদেশে এ দিনটি রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারি ছুটি হিসেবে পালিত হয়।ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আলোচনা সভা, সেমিনার, কোরআন তেলাওয়াত প্রতিযোগিতা হয়।
মসজিদ-মাদরাসায় কোরআনখানি, দরুদ মাহফিল ও দোয়া আয়োজন করা হয়।
রাজধানী ঢাকা,বন্দরনগরী চট্রগ্রাম সহ দেশের বিভিন্ন শহরে আলোকসজ্জা ও শোভাযাত্রার আয়োজন দেখা যায়।
সমাজের অসহায় মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ ও মানবসেবামূলক কার্যক্রমও অন্যতম অংশ।

“সেরা মানুষ সেই, যে মানুষের উপকারে আসে।” —হযরত মুহাম্মদ (সা.)

আজকের প্রেক্ষাপটে প্রাসঙ্গিকতা:
বিশ্ব যখন যুদ্ধ, বৈষম্য ও সহিংসতায় জর্জরিত,প্রতিনিয়ত এই বিশ্ব হিংস্রতায় কুপোকাত তখন নবীজির জীবনদর্শন আমাদের সামনে শান্তি, ন্যায়, মানবকল্যাণ ও ভ্রাতৃত্বের মহা পাঠ জীবনের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা হিসেবে তুলে ধরে।

উপসংহার:
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) শুধু একটি দিন নয়; একটি ধর্ম ও এ মানবজাতির একমাত্র মহান ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ পুরুষের জন্ম ও ওফাত দিবস হিসেবে এটি মানবতার প্রতি চিরন্তন ভালোবাসার প্রতীক ও স্মরণীয় এক ঐতিহাসিক দিন । নবীজির জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে যদি আমরা সমাজ ও রাষ্ট্রকে পরিচালিত করতে পারি, তবে পৃথিবী ভরে উঠবে শান্তি ও করুণার আলোয়।

এমএইচ/এমকেআর/দেশবিদেশ 


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ