
৩৬ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান, রাত পোহালেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন। আগামীকাল সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে ভোটগ্রহণ চলবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ অনুষদের ১৫টি কেন্দ্রে মোট ৬০টি কক্ষে। নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসে বিরাজ করছে উৎসবমুখর ও উত্তেজনাপূর্ণ পরিবেশ।
প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩০০টি স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও ৭০০টি গোপন বুথ। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে আলাদা ভোটকেন্দ্রের ব্যবস্থা। প্রতিটি শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় সংসদের ২৬টি ও হল সংসদের ১৪টি, মোট ৪০টি ভোট প্রদান করবেন।
এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে ১৩টি প্যানেল
দ্রোহ পর্ষদ: ছাত্র ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সমর্থিত। ভিপি পদে ঋজু লক্ষ্মী অবরোধ, জিএস ইফাজ উদ্দিন আহমদ ইমু।
ছাত্রদল প্যানেল: ভিপি সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়, জিএস শাফায়াত হোসেন, এজিএস আইয়ুবুর রহমান তৌফিক।
সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট: ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত। ভিপি ইব্রাহিম হোসেন রনি, জিএস সাঈদ বিন হাবিব।
স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী সম্মিলন: ভিপি মাহফুজুর রহমান, জিএস আরএম রশীদুল হক দিনার।
সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ: ভিপি আব্দুর রহমান রবিন, জিএস আব্দুর রহমান।
বৈচিত্র্যের ঐক্য: গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল ও জাতিভিত্তিক সংগঠন সমর্থিত জোট।
অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য: সুফিবাদী দর্শনে বিশ্বাসী শিক্ষার্থীদের প্যানেল।
সার্বভৌম শিক্ষার্থী ঐক্য: বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্লাব ও সংগঠনের নেতাদের অরাজনৈতিক জোট।
বিনির্মাণ শিক্ষার্থী ঐক্য: স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি ও ছাত্র ফেডারেশন সমর্থিত প্যানেল।
সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ: ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ইসলামী ছাত্র মজলিসের যৌথ প্যানেল।
রেভ্যুলেশন ফর স্টেট অব হিউম্যানিটি: বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লব স্টুডেন্ট ফ্রন্টের পাঁচ সদস্যের প্যানেল।
ভয়েস অব সিইউ: সম্পাদকীয় পদকেন্দ্রিক স্বতন্ত্র প্যানেল।
সর্বজনীন ছাত্র ঐক্য পরিষদ: নবীনদের অংশগ্রহণে নতুন উদ্যোগ।
নির্বাচনকে ঘিরে শেষ মুহূর্তের প্রচারণায় মুখর পুরো ক্যাম্পাস। প্রার্থীরা ব্যস্ত সমর্থকদের নিয়ে শেষবারের মতো ভোটারদের কাছে পৌঁছাতে।
ছাত্রদল মনোনীত জিএস প্রার্থী শাফায়াত হোসেন বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধি বেছে নেবে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
অন্যদিকে ছাত্রশিবির সমর্থিত ভিপি প্রার্থী ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, “শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। তারা আমাদের ভালোভাবে গ্রহণ করেছে। আশা করি ভালো ফল আসবে।”
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় সূচনার এই নির্বাচনে সবার চোখ এখন ভোটকেন্দ্রের দিকে।