
রাঙামাটির চন্দ্রঘোনায় কৃষক দিদার আলম (২৮) হত্যা মামলার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।স্ত্রীর পরকীয়ার সম্পর্ক জেনে যাওয়ায় দিদার আলমকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
রোববার (১২ অক্টোবর) সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে পিবিআই জানায়, স্ত্রী কহিনুর আক্তার (২৭) পরকীয়ার বিষয়টি ধামাচাপা দিতে প্রেমিকের পরামর্শে নিজ হাতে স্বামীকে হত্যা করেন। তদন্ত শেষে কহিনুর আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে ঘটনার পূর্ণ বিবরণ উঠে আসে।
তদন্তে জানা গেছে, কহিনুর আক্তারের সঙ্গে দিদার আলমের বন্ধু আব্দুল খালেকের (৩০) পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
একদিন আপত্তিকর অবস্থায় দুজনকে হাতেনাতে ধরে ফেলেন দিদার। পরে স্ত্রী ও বন্ধুকে বকাঝকা করলে কহিনুর খালেকের সঙ্গে মিলে স্বামীকে হত্যার হুমকি দেয়।
এদিকে কহিনুরের সঙ্গে তার প্রতিবেশী হানজালা (২৬)-এরও তিন বছরের গোপন প্রেম ছিল। দিদারের নির্যাতনের কথা জানালে হানজালা তাকে স্বামীকে হত্যার পরামর্শ দেয় এবং বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়।
পরিকল্পনা অনুযায়ী হানজালা কহিনুরকে ঘুমের ওষুধ এনে দেয়। ৩০ মে রাতে দিদারকে দুধের সঙ্গে ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানো হয়।রাত ২টার দিকে ঘুমন্ত অবস্থায় কহিনুর দিদারের বুকের ওপর বসে নাক-মুখে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে।
হত্যার পর হানজালা ও তার সহযোগী সেলিম (২৮) দিদারের লাশ ধান শুকানোর প্লাস্টিক দিয়ে মুড়ে পাশের কোদালা খালে ফেলে দেয়।
সেই রাতে প্রবল বৃষ্টির কারণে খালের পানির স্রোতে লাশ ভেসে যায়। এখনো দিদারের মৃতদেহ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছে পিবিআই।
দিদারের নিখোঁজ হওয়ার পর ৩১ মে তার বাবা জামির হোসেন চন্দ্রঘোনা থানায় জিডি করেন।পরে স্ত্রী কহিনুর ও খালেকসহ অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে অপহরণ মামলা দায়ের করেন তিনি।
আদালতের নির্দেশে পিবিআই মামলার তদন্তভার নেয়।তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পিবিআই গাজীপুর থেকে কহিনুর ও খালেককে গ্রেপ্তার করে।
রিমান্ডে কহিনুর হত্যার ঘটনা স্বীকার করে বিস্তারিত বর্ণনা দেয়।
৯ অক্টোবর আদালতে হাজির করা হলে কহিনুর স্বামীকে হত্যা ও লাশ গুমের স্বীকারোক্তি দেন।পরবর্তীতে ১১ অক্টোবর হানজালা ও সেলিমকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারাও আদালতে জবানবন্দি দিয়ে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন।
পিবিআই, চট্টগ্রাম জেলার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন,“হত্যাকাণ্ডে জড়িত তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের সবার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। নিহতের মৃতদেহ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত আছে।”