
গাজা উপত্যকায় আবারও এক ভয়াবহ রাত কাটিয়েছে স্থানীয়রা। স্থানীয় হাসপাতালের তথ্যমতে, বুধবার একদিনেই ইসরায়েলি সেনাদের হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৮০ জন ফিলিস্তিনি। নিহতদের বেশিরভাগই গাজা সিটির বাসিন্দা।
গাজা সিটির সেন্ট্রাল দারাজ এলাকার ফাইরাস মার্কেটের কাছে বাস্তুচ্যুত পরিবারের আশ্রয়স্থল একটি ভবন ও তাঁবুতে রাতভর বোমা হামলায় নারী-শিশুসহ অন্তত ২০ জন নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা মূলত হামাসের দুই যোদ্ধাকে লক্ষ্য করে অভিযান চালিয়েছে। তবে স্থানীয় সূত্র ও হাসপাতালের হিসাবের সঙ্গে তাদের বক্তব্যের মিল নেই। এদিকে ট্যাংক ও সৈন্য নিয়ে গাজার শহরতলির ভেতরে প্রবেশ করছে ইসরায়েলি বাহিনী।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজার লাখো মানুষ ভয়াবহ মানবিক সংকটে রয়েছেন। স্বাস্থ্যসেবা ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো প্রায় ভেঙে পড়েছে। দক্ষিণ গাজার ‘মানবিক এলাকা’ আল-মাওয়াসি জনাকীর্ণ হয়ে পড়েছে এবং সেখানে নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি বাড়ছে।
গাজাবাসী থায়ের সাকর জানান, দক্ষিণে যাওয়ার পথে ট্যাংকের গুলিতে তার বোন নিহত হয়েছেন। তিনি শোকে বলেন, “আমাদের সবাইকে হত্যা করলেও আমরা গাজা ছাড়ব না।”
জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদ গাজায় আইডিএফের নির্বিচার হামলা ও বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংসের নিন্দা জানিয়েছে। তাদের মতে, এসব হামলা বাস্তুচ্যুতি ও মানবিক বিপর্যয়কে দীর্ঘায়িত করছে। একইসঙ্গে ইসরায়েলি নেতৃত্বের প্রকাশ্য হুমকিরও সমালোচনা করেছে তারা।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে হামাসের আকস্মিক হামলার পর থেকে গাজায় চলমান সামরিক অভিযানে ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। ওই হামলায় ১,২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, এরপর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৬৫ হাজার ৪১৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নারী, শিশু ও বৃদ্ধ—কেউই নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে পাচ্ছেন না। প্রতিটি দিন, প্রতিটি রাত গাজায় মৃত্যু ও হতাশার নতুন ইতিহাস লিখছে।
এমকেআর/দেশবিদেশ