• শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:২৫ অপরাহ্ন

পুলিশ আসলেন মেডিকেল কর্তৃপক্ষের হয়ে

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ভুল চিকিৎসা, রোগী কোমায়

দেশবিদেশ প্রতিবেদক / ১১৬
শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
অনলাইন জুয়ার ফাঁদ 1

নগরের বহুল আলোচিত বেসরকারি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন হাসপাতালে আবারও উঠেছে ভয়াবহ ভুল চিকিৎসা ও চিকিৎসকের অবহেলার অভিযোগ। স্বজনদের দাবি, কেবলমাত্র চিকিৎসকের গাফিলতি আর হাসপাতালের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারণেই রোগী আজ কোমায়, জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে।

শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর ) রাত ১০টার দিকে হাসপাতালে অভিযোগ তোলে কোমায় থাকা রোগীর পরিবার। রোগীর নাম ফাহমিদা হোক(৪২); তিনি নগরের দেওয়ানবাজার এলাকার বাসিন্দা।

“ভুল অপারেশন, দায়িত্বজ্ঞানহীন চিকিৎসক”- স্বজনদের ক্ষোভ

রোগীর স্বামী রেজাউল করিম চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে বলেন, “আমার স্ত্রী স্ট্রোক করলে ১৭ সেপ্টেম্বর, প্রথমে মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যাই। পরে এইচডিইউর সিট না থাকায় মেট্রোপলিটন হাসপাতালে ভর্তি করি। সকালে কিছুটা উন্নতি হলেও ডা. মাঈনদ্দীন জাহেদ সিটি স্ক্যান করে জানান মাথায় রক্ত জমেছে, জরুরিভাবে তাৎক্ষনিক অপারেশন দরকার। আমরা রাজি হই। কিন্তু সকাল ৮টায় অপারেশন করার কথা বলে তিনি আসেন দুপুর ২টায়। তখন বলেন সরকারি চাকরির কাজে যেতে হয়েছে। এর মধ্যে আমার স্ত্রীর অবস্থা ভয়াবহ হয়ে যায়।”

অভিযোগ করা হয়, অপারেশনের পরও রোগীকে পর্যবেক্ষণে না রেখে চিকিৎসক কক্সবাজারে সরকারি চাকরিস্থলে চলে যান। রোগীর অবস্থা আরও খারাপ হলে অন্য এক চিকিৎসক সিটি স্ক্যান করে দেখেন মাথায় এখনো রক্ত জমে আছে। তিনি জানান, রোগীকে অবজারভেশনে রাখা হয়নি, যা মারাত্মক ভুল।

রেজাউল করিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমার রোগী জীবন-মৃত্যুর লড়াই করছে, আর ডাক্তার সাহেব ফোনে জানাচ্ছেন তিনি কক্সবাজারে! পরে এসে বলেন রোগী ক্লিনিক্যালি মৃত। তিনি যদি সরকারি চাকরিতে থাকেন, তাহলে প্রাইভেট হাসপাতালে কেন অপারেশন করেন? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই বা তাকে কেন দায়িত্বে রাখল?”

হাসপাতালের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন

রোগীর মামাতো ভাই বলেন, “এটা শুধুই চিকিৎসকের নয়, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেরও গাফিলতি। বারবার ফোন করেও কাউকে পাইনি। এমনকি একটা সমবেদনা জানাতেও কেউ আসেনি।

স্বজনরা অভিযোগ করেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের অভিযোগকে মব তৈরি বলে আখ্যা দিয়ে থানায় খবর দেয়। রোগীর স্বনরা চকবাজার থানায় গেলে অভিযোগ গ্রহণ না করে পুলিশ উল্টো মেডিকেলের পক্ষ নিয়ে এসে রোগীর লোকদের সাথে জেরা করেন। যেন পুলিশি তাদের ভুল চিকিৎসার পাহারাদার।
পরে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেলে চোরের মতো বেরিয়ে যান মেডিকেল থেকে।এদিকে ঘটনার বিষয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক ডা. মাঈনদ্দীন জাহেদকে প্রশ্ন করা হলে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান।

অন্যদিকে হাসপাতালের এজিএম আমান উল্লাহকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, “ভুল চিকিৎসা হয়েছে কিনা বলতে পারছি না। তবে তদন্তের পর জানানো হবে।”

এআরই/ দেশবিদেশ


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ