• শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৩২ অপরাহ্ন

শেখ হাসিনা ও কামালের মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৪৬
সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫
hasina kamal 20251117130300

জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত ও পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

একই মামলায় দায় স্বীকার করে ‘অ্যাপ্রুভার’ হওয়া পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১৭ নভেম্বর) চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ রায় ঘোষণা করেন। বেঞ্চের অন্য দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

অভিযোগ ও রায়

আদালত বলেন, তিন আসামির বিরুদ্ধেই অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।
মোট পাঁচটি অভিযোগের মধ্যে দুটি অভিযোগে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড এবং একটি অভিযোগে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
আসাদুজ্জামান খান কামালকে একটি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।

শুনানি ও পূর্ববর্তী কার্যক্রম

গত ২৩ অক্টোবর যুক্তিতর্ক শেষে রায়ের তারিখ নির্ধারণের জন্য ১৩ নভেম্বর দিন ঠিক করা হয়। পরবর্তীতে ১৭ নভেম্বর রায় ঘোষণার দিন ধার্য করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম।
পলাতক দুই আসামির পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে শুনানি করেন মো. আমির হোসেন।

গত ১০ জুলাই ট্রাইব্যুনাল এ মামলায় অভিযোগ গঠন করেন এবং সাবেক আইজিপি মামুনের অ্যাপ্রুভার হওয়ার আবেদন মঞ্জুর করেন।

মামলার অভিযোগসমূহ

প্রথম অভিযোগ: গত বছরের ১৪ জুলাই গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনকারী ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগ আনা হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে। এরপর তাঁর নির্দেশনা ও তৎকালীন সরকারঘনিষ্ঠ মহলের সহযোগিতায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় দেড় হাজারের বেশি মানুষ নিহত ও প্রায় ২৫ হাজার আহত হয়।

দ্বিতীয় অভিযোগ: আন্দোলন দমনে হেলিকপ্টার, ড্রোন ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা—এমন অভিযোগ আনা হয়। তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও আইজিপির মাধ্যমে সেই নির্দেশ বাস্তবায়ন করা হয়। উপাচার্য এএসএম মাকসুদ কামাল এবং সাবেক মেয়র ফজলে নূর তাপসের সঙ্গে কথোপকথনের অডিও এ অভিযোগের প্রমাণ হিসেবে আদালতে উপস্থাপন করা হয়।

তৃতীয় অভিযোগ: রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তিন আসামিকে অভিযুক্ত করা হয়।

চতুর্থ অভিযোগ: রাজধানীর চানখাঁরপুলে ছয় আন্দোলনকারীকে গুলি করে হত্যার দায়েও একই তিনজনকে অভিযুক্ত করা হয়।

পঞ্চম অভিযোগ: আশুলিয়ায় ছয়জনকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান ও মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়।


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ