
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সম্প্রতি শেখ হাসিনার নামে যমুনা টিভির আদলে তৈরি একটি ফটোকার্ড ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দাবি করা হয়েছে ,আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের খবর শুনে ভারতের নয়াদিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে শেখ হাসিনার মৃত্যু হয়েছে। ফটোকার্ডটিতে শেখ হাসিনার নাম ও ছবি ব্যবহার করা হলেও, সেটি সম্পূর্ণ ভুয়া বলে প্রমাণ পেয়েছে ফ্যাক্টচেকিং প্ল্যাটফর্ম ফ্যাক্টওয়াচ।
ফ্যাক্টওয়াচের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ফটোকার্ডে ব্যবহৃত ছবিটি শেখ হাসিনার নয়, বরং ভারতের এক বৃদ্ধা নারীর ছবি এডিট করে তৈরি করা হয়েছে। ৮২ বছর বয়সী ওই নারীর নাম রাজ পাসরিচা, যিনি ভারতীয় সেনা কর্মকর্তার বিধবা স্ত্রী। দিল্লি বিমানবন্দরে হুইলচেয়ার না পেয়ে হাঁটতে বাধ্য হওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি এবং পরে হাসপাতালে ভর্তি হন।
ভারতের সংবাদমাধ্যম ফার্স্টপোস্ট ও হিন্দুস্তান টাইমস-এর প্রতিবেদনের বরাতে ফ্যাক্টওয়াচ জানায়, রাজ পাসরিচা বেঙ্গালুরু যাওয়ার জন্য ৪ মার্চ এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে ওঠেন। পরিবার আগেই হুইলচেয়ার বুক করলেও এয়ার ইন্ডিয়া তা সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়। ফলে তিনি হেঁটে টার্মিনাল অতিক্রম করেন এবং পরবর্তীতে অসুস্থ হয়ে পড়েন। এই ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনাও হয়।
অন্যদিকে, ভাইরাল ফটোকার্ডে উল্লেখ করা তারিখ ১৩ মে ২০২৫ হলেও, যমুনা টিভির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে ঐদিন বা পরে শেখ হাসিনাকে নিয়ে এমন কোনো সংবাদ বা ফটোকার্ড প্রকাশিত হয়নি।
ফ্যাক্টওয়াচের বিশ্লেষণে আরও বলা হয়, আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন জারি হয় ২০২৫ সালের ১২ মে—অর্থাৎ রাজ পাসরিচার ঘটনার দুই মাস পর। তাই এই দুই ঘটনার মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই।
মূলধারার কোনো গণমাধ্যমেও শেখ হাসিনার মৃত্যু সংক্রান্ত কোনো নির্ভরযোগ্য খবর প্রকাশিত হয়নি। ফলে ভাইরাল ফটোকার্ডটি সম্পূর্ণ বিকৃত ও বিভ্রান্তিকর বলে নিশ্চিত করেছে ফ্যাক্টওয়াচ।
এমকে/দেশবিদেশ