• শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:০০ অপরাহ্ন

বিএনপি হলো লাউ, জামায়াত হলো কদু: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৩১
মঙ্গলবার, ২৮ অক্টোবর, ২০২৫
pat 1761065202

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, সামনে যে নির্বাচন আসছে এটি হলো ‘লাউ-কদুর ইলেকশন’। যেখানে তিনি বিএনপি ও জামায়াতকে ‘লাউ-কদু’র সঙ্গে তুলনা করেছেন ।

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এনসিপি আয়োজিত ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন রূপরেখা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সামনে ইলেকশন আসতেছে। কেমন ইলেকশন হবে? ‘লাউ-কদুর ইলেকশন’। লাউ হলো বিএনপি আর কদু হলো জামায়াত। চারদলীয় জোটে লাউ-কদু একসঙ্গেই ছিল। জুলাই আন্দোলনেও ছিল। আপনারা যে লাউ-কদুর ইলেকশন করতে যাচ্ছেন তার আগে অনেক কিছু প্রসেস আছে। আমরা বাংলাদেশে কোনো লাউ বিএনপি আর কদু জামায়াত- এ দুটির কোনো ইলেকশন দেখতে চাচ্ছি না।

নাসীরুদ্দীন বলেন, বিএনপি ও জামায়াত নিজেদের মধ্যে একটা আন্ডারস্ট্যান্ডিং করে এখন এসে একটা ভং ধরেছে যে আমরা বিরোধী, আর তোমরা সরকারে। এই ধরনের জিনিসগুলো বাংলাদেশের সামনে আরও বেশি স্পষ্ট হবে। একটি দল তাদের এক পা দিয়ে রেখেছে ইন্ডিয়ার মধ্যে, আরেকটি দলের এক পা পাকিস্তানের মধ্যে। এজন্য বাংলাদেশের জনগণকে নতুন করে স্লোগান তৈরি করতে হয়-আমরা দিল্লিও চাই না, আমরা পিন্ডিও চাই না, আমরা আসলে ঢাকাকে চাই।

প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, যেহেতু জনতা আপনাকে ক্ষমতা দিয়েছে, আপনি এখন জনগণের সামনে যাবেন—জনগণের সামনে উপস্থিত হবেন। আপনি শহীদ মিনারে যাবেন, সব আহতকে ডাকবেন, সব শহীদের পরিবারকেও ডাকবেন; তাদের ডেকে বলবেন—তোমাদের রক্তের ওপরে আমি বসেছিলাম, আজকে আমি আদেশের মাধ্যমে তোমাদের যে পাওনা—নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন—আমি আজকে সাইনের মধ্যে তোমাদের এটা বুঝিয়ে দিচ্ছি। এটা ছাড়া ড. ইউনূসের বাংলাদেশে আর কোনো এক্সিট প্ল্যান নেই।

‘দ্বিতীয়ত যে বিষয়, ঐকমত্য কমিশন থেকে এই সংস্কার প্রক্রিয়ার যে পেপারগুলো রয়েছে, এগুলো এখন আইন মন্ত্রণালয়ে গিয়েছে, অর্থাৎ এগুলো এখন আইন মন্ত্রণালয়ের কাজ। ফলে উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের সামনে দুইটা চ্যালেঞ্জ। এক নম্বর চ্যালেঞ্জ, এই সংস্কার প্রক্রিয়াগুলো জনগণের যে ন্যায় দাবি, তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে। দুই নম্বর হলো, বিচার প্রক্রিয়া তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে। এই সংস্কার প্রক্রিয়া এবং বিচার প্রক্রিয়া যদি উনি বুঝিয়ে না দিতে পারেন, তাহলে আসিফ নজরুলের বাংলাদেশে কোনো এক্সিট প্ল্যান নেই। ওনার বড় দায়বদ্ধতা রয়েছে। উনি তো প্রধান উপদেষ্টা হতে চেয়েছিলেন, এখন দেখি উনি আসলে বাংলাদেশের মানুষের প্রয়োজনটা পূরণ করে দিতে পারেন কি না।’

সরকারের উদ্দেশে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, আগে গণভোট দিন—জনগণ নিজের ভবিষ্যৎ নিজেরাই নির্ধারণ করুক। ৩০০ আসনে আজও গডফাদারদের রাজনীতি চলছে, সাধারণ মানুষ ভোট দিতে পারে না। গণভোটের মধ্য দিয়েই জনগণের আসল মতামত জানা যাবে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের কার্যকারিতা ও নিরপেক্ষতা যাচাইয়ের জন্যও গণভোটই হতে পারে পরীক্ষার প্রথম ধাপ।

নাসীরুদ্দীন সতর্ক করে বলেন, সংস্কার প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন না হলে দেশে গৃহযুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। আপনারা লন্ডন, ওয়াশিংটন বা বেইজিং দৌড়াবেন না, ঢাকাই হবে দক্ষিণ এশিয়ার কেন্দ্র।

তিনি শহীদ পরিবার, আহত যোদ্ধা, শিক্ষক, শ্রমিক ও সাধারণ সৈনিকদের সম্মানজনক জীবনযাপনের নিশ্চয়তা দাবি করেন। ‘এরা রাষ্ট্রের মেরুদণ্ড, তাদের দাবি পূরণ করতে হবে,’—বলেন এনসিপি নেতা।

এ সময় তিনি ঘোষণা দেন, তারা কোনো গোপন দরজা বা বিদেশি দূতাবাসনির্ভর রাজনীতি করবেন না। নাসীরুদ্দীন বলেন, আমরা জনগণের মধ্যেই থাকব, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াতেই এগোবো। জনগণই আমাদের সরকারে বসাবে।

এ সময় বক্তব্য রাখেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, যুগ্ম সম্পাদক জাবেদ রাশিম, ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদী, সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী শিশির মনির, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রচার সম্পাদক শেখ মজলুল করীম মারুফ, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির ইউসুফ আশরাফ, নারী রাজনৈতিক অধিকার ফোরামের তাপসী রাবেয়া এবং শহীদ মুগ্ধর ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ