
বাংলাদেশের দ্বিতীয় রাজধানী ও ব্যস্ততম বন্দরনগরী চট্টগ্রাম প্রতিদিন হাজারো মানুষের পদচারণায় মুখর থাকে। জীবিকার তাগিদে ছুটে চলা এই মানুষদের জন্য শহরের সড়ক পারাপার যেন মৃত্যুঝুঁকির সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরীর শাহ্ আমানত সেতু সংযোগ সড়ক, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর, ২নং গেইট, জিইসি, লালখান বাজার, টাইগার পাস, দেওয়ানহাট, আগ্রাবাদ, নিমতলা বিশ্বরোড, অলংকার, হালিশহর, বড়পোল, কাস্টমস, সল্টগোলা ক্রসিং এবং সিমেন্ট ক্রসিং এলাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটলেও কোনো ফুটওভারব্রিজ নির্মাণ হয়নি। অন্যদিকে নিউমার্কেট এলাকায় স্থাপিত দুইটি ফুটওভারব্রিজও ব্যবহার করছেন না পথচারীরা।
সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ নগরীর প্রাণকেন্দ্র বহদ্দারহাট মোড়। কালুরঘাট, নতুন ব্রিজ ও শহরের কেন্দ্র , ত্রিমুখী এ সড়কপথে প্রতিদিন হাজারো মানুষকে পারাপার হতে হয়। অথচ নেই কোনো ফুটওভারব্রিজ। মাঝখানের সড়কবাঁধে রাখা ফাঁক দিয়ে দৌড়ে পার হওয়াই পথচারীদের একমাত্র ভরসা। প্রতিটি পারাপার যেন জীবন বাজি রেখে খেলা, পৌঁছাবেন গন্তব্যে, নাকি নিস্তেজ শরীর পড়ে থাকবে সড়কে।
চারপাশে হর্নের বিকট শব্দ, ছুটে চলা বাস-মিনিবাস, হঠাৎ দিক পাল্টানো সিএনজি আর মোটরসাইকেল—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি হয় শ্বাসরুদ্ধকর। শব্দদূষণ ও ধুলাবালিও যেন মৃত্যুঘণ্টার পূর্বাভাস।
এক পথচারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ভাই, জীবিকার টানে বের হই। দেরি করলে চাকরি যাবে। তাই জান হাতে নিয়েই দৌড়ে রাস্তা পার হই। বাঁচা-মরার চিন্তা করার সময় পাই না।”
দেশবিদেশ২৪ প্রতিবেদক যোগাযোগ করলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাহী পরিচালক শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম জানান, বহদ্দারহাট ও লালখানবাজারে ফুটওভারব্রিজ নির্মাণের টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে, টাইগার পাস এলাকা বিবেচনাধীন।
তবে প্রশ্ন থেকে যায়, টেন্ডারের কাগজে নয়, বাস্তবে ফুটওভারব্রিজ কবে দাঁড়াবে? নগরীর ব্যস্ততম মোড়ে কি কোনো কার্যকর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা আছে, নাকি প্রতিদিনের ভিড়ই নতুন শোকবার্তার জন্ম দেবে?
এআরই/দেশবিদেশ