
লেখক, গবেষক ও জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি বদরুদ্দীন উমর মারা গেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন।
রবিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৫ মিনিটে রাজধানীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর।
জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন বদরুদ্দীন উমর। সকালে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে হাসপাতালে নেওয়া হয় তাঁকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
১৯৩১ সালের ২০ ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বর্ধমান শহরে জন্ম নেন বদরুদ্দীন উমর। তাঁর বাবা ছিলেন আবুল হাশিম, ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিম জাতীয়তাবাদী রাজনীতিবিদ।
বদরুদ্দীন উমর ১৯৫৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শনে স্নাতক এবং ১৯৫৫ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তী সময়ে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দর্শন, রাজনীতি ও অর্থনীতিতে (পিপিই) ডিগ্রি লাভ করেন। দেশে ফিরে ১৯৬৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেন।
গভর্নর মোনায়েম খানের স্বৈরাচারী আচরণের প্রতিবাদে ১৯৬৮ সালে শিক্ষকতা ছাড়েন তিনি। এরপর লেখালেখি, গবেষণা ও বামপন্থী রাজনীতিতে সম্পূর্ণ মনোনিবেশ করেন। ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা করেন এবং সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
ভাষা আন্দোলন, জাতীয়তাবাদ ও সংস্কৃতি বিষয়ে বদরুদ্দীন উমরের গবেষণা বিশেষভাবে সমাদৃত। তাঁর উল্লেখযোগ্য বইয়ের মধ্যে রয়েছে সাম্প্রদায়িকতা (১৯৬৬), সংস্কৃতির সংকট (১৯৬৭) এবং সাংস্কৃতিক সাম্প্রদায়িকতা (১৯৬৯)। এসব গ্রন্থ বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সাংস্কৃতিক ভিত্তি গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।