• সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:১৪ অপরাহ্ন

নিরাপত্তাহীনতার আঁধারে নারী নির্ভর জোবরা: প্রশাসনের আশ্বাসে কি ফিরবে শান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক / ৪৩
বৃহস্পতিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
IMG 20250904 WA00031

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন জোবরা গ্রাম এখন আতঙ্কে নিস্তব্ধ। পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে গোটা গ্রাম। নিরাপত্তাহীনতার ভয়ে অধিকাংশ পুরুষ গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। রাস্তাঘাটে দেখা মিলছে কেবল নারীদের। কিন্তু তারাও দিন কাটাচ্ছেন চরম উৎকণ্ঠায়। যে কোনো সময় দুর্ঘটনা বা সংঘর্ষ ঘটলে প্রতিরোধ করার মতো কাউকে পাওয়া যাবে না—এই ভয়ে গ্রামবাসীর রাত-দিন কাটছে আতঙ্কে।

এমন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে সংঘর্ষ পরবর্তী মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মুমিন এলাকা পরিদর্শন করেন। দীর্ঘদিন ধরে জোবরা গ্রামবাসী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে সহাবস্থান করলেও একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হঠাৎই গ্রামজুড়ে উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করেছে। প্রশাসন এখন উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানাচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পুরো গ্রামে পুরুষশূন্যতার ভয়াবহ চিত্র। স্থানীয় নারীরা আক্ষেপ করে জানান, রাতে বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে প্রতিরোধ করার মতো কেউ নেই। তারা নিজেদের সম্পূর্ণ অসহায় ও নিরাপত্তাহীন বলে মনে করছেন।

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব নাছির উদ্দিন মুনির বলেন, “জোবরা গ্রামবাসী তাদের জায়গা-জমি বিসর্জন দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। তখন থেকে গ্রামবাসী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় ছিল। কিন্তু একটি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই ভয়াবহ সংঘর্ষ অত্যন্ত মর্মান্তিক।”

তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ঘটনার সঠিক তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করতে হবে। পাশাপাশি গ্রামবাসীর ক্ষয়ক্ষতি পূরণ এবং আহত শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসীর সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা জরুরি।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও জানানো হয়েছে, একাডেমিক ও সামাজিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। গ্রামবাসী ও শিক্ষার্থীরা যেন আবার শান্তিপূর্ণভাবে মিলেমিশে বসবাস করতে পারেন, সে লক্ষ্যে প্রশাসন কাজ করছে।

ইউএনওর পরিদর্শনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নূর মোহাম্মদ, ফতেপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মো. জাকির হোসেন, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মুছা সিদ্দিকী, ২ নম্বর ইউপি সদস্য আব্দুল কাদের, মো. আবুল বশর বাবুল, আনন্দ বিকাশ বড়ুয়া, মো. মোজাহের ও লোকমান চৌধুরী।

উল্লেখ্য, গত ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট এলাকার ভাড়া বাসায় এক নারী শিক্ষার্থীর প্রবেশকে কেন্দ্র করে হেনস্তার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়, যা গভীর রাত পর্যন্ত চলে। পরদিন ৩১ আগস্ট সংঘর্ষ আরও ভয়াবহ রূপ নেয়। এতে আহত হন প্রোভিসি, প্রক্টরসহ কয়েকশ শিক্ষার্থী। এরপরও বেশ কয়েকদিন পরিস্থিতি ছিলো উত্তপ্ত; দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।আহত হয়েছেন বহু শিক্ষার্থী ও গ্রামবাসী, তাদের মধ্যে অন্তত তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে।

এমএইচ/এমকেআর /দেশবিদেশ 


এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ