
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৪৭ বছরের পুরোনো খেলার মাঠ দখলের চেষ্টাকে ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে—চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন, ভূমি অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে মাঠটি অবৈধভাবে দখলের চেষ্টা চলছে।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রোববার (২৪ আগস্ট) দুপুরে মাঠে অভিযান চালায়। দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত কার্যালয়-১-এর সহকারী পরিচালক সায়েদ আলমের নেতৃত্বে অভিযানে মাঠ পরিদর্শন করা হয় এবং বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মালিকানা সংক্রান্ত আংশিক কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়।
দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রয়োজনীয় নথিপত্র যাচাই-বাছাই শেষে দ্রুত কমিশনের কাছে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শিক্ষার্থীদের খেলার জন্য ব্যবহৃত প্রায় ১৫ কাঠা জমির এই মাঠটি ২০০৬ সালে একটি পক্ষ মাত্র ৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকায় ক্রয় করার দাবি করে। এরপর থেকে মাঠের মালিকানা নিয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে মামলা চলছে। মামলার রায় হওয়ার আগেই সম্প্রতি ওই পক্ষ ভূমি অফিসে মাঠটি নিজেদের নামে নামজারির আবেদন করলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে এবং চট্টগ্রামজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীদের অভিযোগ, মাঠটি স্কুলের সম্পত্তি। অথচ জেলা প্রশাসন, ভূমি অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের একাধিক কর্মকর্তার যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে মাঠটি হাতিয়ে নেওয়ার অপচেষ্টা চলছে।
বাকলিয়া ভূমি অফিস সূত্র জানায়, এর আগেও ওই পক্ষ চারবার নামজারি আবেদন করেছিল, তবে প্রতিবারই তা খারিজ করা হয়েছে।
দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এর উপপরিচালক সুবেল আহমেদ বলেন, “অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজশে সরকারি বিদ্যালয়ের জমি অবৈধভাবে বিক্রি করে রাষ্ট্রীয় সম্পদ ক্ষতির অভিযোগের ভিত্তিতে আজ অভিযানে নেমেছি। বিদ্যালয়ের মাঠ সরেজমিনে দেখা হয়েছে এবং প্রাথমিক রেকর্ড সংগ্রহ করা হয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে সব নথি যাচাই শেষে কমিশনের কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হবে।”