চোখে একরাশ স্বপ্ন তাকে তাড়িয়ে বেড়াতো তাই আজ গ্রাম থেকে শহরের রুপোলি পর্দার অভিনেতা সিদ্ধার্থ মন্ডল





শেয়ার

ভারতের পশ্চিম বাংলার পুরুলিয়ার ছোট্ট একটি গ্রাম কাশিপুর থেকে উঠে আসা উদিয়মান জনপ্রিয় অভিনেতা সিদ্ধার্থ মন্ডল। একরাশ স্বপ্ন নিয়ে নানা বাধা বিঘ্ন কাটিয়ে এ পেশায় আসতে দীর্ঘ এক যুদ্ধের মুখোমুখি হতে হয়েছে  সিদ্ধার্থকে। তার ছোটবেলা থেকে পড়াশোনা প্রতি ঝোঁক ছিল কিন্তু মুল ভালোবাসার বিষয় ছিল অভিনয়। স্কুলের অনুষ্ঠানে নাটক করা কিংবা কলেজের হোষ্টেলে নিজের মত করি মুকাভিনয় করে বেশ মজার বিষয় হয়ে উঠতো সকালের কাছে। তাই খুব সময়ের মধ্যে সকলের প্রিয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু সবসময় অভিনয় করার খিদে আর চোখে একরাশ স্বপ্ন নিয়ে তাকে তাড়িয়ে বেড়াতো। না জানাকে জানার, না পারাকে পারার ইচ্ছে ছিল প্রবল। ছোট থেকে লেখালেখি করার অথবা নতুন কিছু করার ঝোঁক ছিল তার। সিদ্ধার্থ মন্ডল ছাত্র জীবনে মেধার স্বাক্ষর   রেখেছেন। কাশীপুর বোর্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার হাতেখড়ি ৷ তারপর পঞ্চকোট রাজ হাই স্কুল তারপর পুরুলিয়া পলিটেকনিক কলেজ থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন ৷ তারপর বি.টেক করার পর যাদবপুর ইউনিভার্সিটি থেকে পোষ্ট ডিপ্লোমা এবং আই আই টি খড়গপুর থেকে কোর্স।  শিক্ষক-শিক্ষিকা বাবা, মাও কখনও এই পেশার  অনিশ্চিয়তার  কারনে কখনোই গুরুত্ব দেননি। তাঁর এই ক্রিয়েটিভ কাজকর্মের প্রতি ভালোবাসায়।

বাবা-মা সবসময়েই চেয়েছিলেন তাঁদের ছেলে সরকারী কোনও ভালো চাকুরী করুক ৷

সরকারী চাকুরি পেয়েছিলেন ঠিকই, করেছেনও কিন্তু ওই যে ক্রিয়েটিভ চিন্তা ভাবনা তাঁকে সবসময় তাড়া করে বেড়িয়েছে, আর সেই তাড়না থেকেই চাকরি ছেড়ে দেওয়া। তিনি ২০০৬ সালে কলেজে পড়ার সময়েই ইটিভি বাংলার ‘মেগাস্টার’-এ অডিশন দেওয়া ও সুযোগ পান। তারপর পড়াশোনার চাপে দীর্ঘদিন কাজ করা হয়নি। এরপর দীর্ঘ দুবছর পর ২০০৮-এ ইটিভিতেই ‘ফাটাফাটি ফিল্মি ফাইট’-এ পার্টিসিপেন্ট হিসাবে যোগ দেওয়া ৷

তারপর ২০১০-এ রূপসী বাংলায় ‘প্রফুল্ল’ মেগায় কাজ। তারপর সানন্দা টিভিতে ‘নায়িকা’,রূপসী বাংলায় ‘প্রেমের ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ’-তে অভিনয়।

পাগলু ২’-তে জুনিয়ার আর্টিস্টের কাজ। ’তারপর 'কানামাছি’ করার সময় তিনি রাজ চক্রবর্তীর নজরে আসেন। তারপর আর তাঁকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। রাজ চক্রবর্তীর ‘প্রলয়’,’যোদ্ধা’,’পারবো না আমি ছাড়তে তোকে’,’ বোঝে না সে বোঝে না’,’কাঠমান্ডু’-তে কাজ করেন। আই লাভ ইউ ৩’- সহ রাজ চক্রবর্তী সঙ্গে সহকারী পরিচালক হিসেবে তিনটি সিনেমাতে কাজ করেছেন। এছাড়াও তিনি ‘চ্যালেঞ্জ২,অ্যাকশন’,জি বাংলা অরিজিনালস-এ নিমকি ফুলকি’,রাখি বন্ধন’ মেগায় তিনি অভিনয় করেছেন ৷ পাশাপাশি তিনি ‘উবাচ’ নাট্যদলের নাটকগুলির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন। তাঁর অভিনীত ‘দুই অলৌকিক বলি’,’যেন স্বধবার একাদশী’-নাটকগুলো খুবই জনপ্রিয়তা পায়। ভারতীয় ও গ্রীক মাইথলজি নিয়ে তাঁর অভিনীত নাটকগুলো সমালোচক দ্বারা উচ্চ প্রশংসিত হয়েছিল। তিনি সাগুপ্তা রফিকের পরিচালনায়

‘মন জানে না’-তে অভিনয় করেন ৷ এছাড়া চুপকথা ২ তে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকাতে অভিনয় করেন ক্লাউন এর চরিত্রে ৷

সম্প্রতি তিনি উমেশ শুক্লার পরিচালনায় ‘মোদি-জার্নি অফ কমন ম্যান’ ওয়েব সিরিজে অভিনয় করেছেন ৷ 

পথ নাটকও করেছেন বহু।ভবিষ্যতে তার পরিকল্পনা আছে ”ওয়ার্ল্ড কন্টেন্টের ওপর কাজ করা, যেমন পরিবেশ বিদ্যা। সিদ্ধার্থ নিজের কাজে নিজেকে পরিচিত করেছেন, কোন পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড ছাড়াই। তার ইচ্ছা আছে ভারতীয় ইতিহাস -ঐতিহ্য নিয়ে সিনেমা তৈরি করার। সিদ্ধার্থ মন্ডলের বিশেষ দিক হচ্ছে বাংলাদেশের মাটি ও মানুষকে খুব ভালোবাসেন। তিনি বাংলাদেশের সিনেমায় অভিনয় করতে অাগ্রহী, তিনি সবসময় ভালোবাসেন জয়া আহসান ও মোশাররফ করিমের  অভিনয়।  তিনি মোস্তফা সারওয়ার ফারুকী ও তকির আহমেদ মতো মেধাবী পরিচালকদের সাথে কাজ করতে চান।

 লেখক: এম.এইচ সোহেল, সম্পাদক শিক্ষা ও সাহিত্যমুলক পত্রিকা অভিযাত্রী এবং অলিভিয়া,ভারতীয় সাংবাদিক।

বিনোদন


শেয়ার