অস্ট্রেলিয়াকেও হারাল নিউজিল্যান্ড





শেয়ার

দেশবিদেশ ২৪.কম অনলাইন ডেস্কঃ  প্রথম ম্যাচে ভারতকে মাত্র ৭৯ রানে গুটিয়ে দিয়েছিল নিউজিল্যান্ডের তিন স্পিনার। এবার দুই স্পিনার ও পেসাররা মিলে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে দিলো! ধর্মশালায় রোমাঞ্চকর ম্যাচে কিউইরা ৮ রানে জিতেছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। ১৪৩ রানের টার্গেট তাড়া করে ৯ উইকেটে ১৩৪ রানে থামতে হয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। ৮ উইকেটে ১৪২ রান করেছিল নিউজিল্যান্ড। আগের ম্যাচ তারা ৪৭ রানে জিতেছিল ১২৬ রান করেও। বাঁ হাতি স্পিনার মিচেল স্যান্টনার ও লেগ স্পিনার ইশ সোধি ইনিংসের মাঝে চাপে রেখেছেন অস্ট্রেলিয়াকে। সোধি ৪ ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছেন। আর স্যান্টনার ৩০ রানে নিয়েছেন ৪ উইকেট। জুড়ি ছিল না পেসার মিচেল ম্যাকক্লেনাঘানেরও। ৩ ওভারে ১৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হয়েছেন। এর দুই উইকেট নিয়েছেন ১৯তম ওভারে। শেষ তিন ওভারে ১১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে হেরেছে অস্ট্রেলিয়া। খেলাটা জমে উঠেছিল শেষ দিকেই।   তখন বেশ চাপে অস্ট্রেলিয়া। ৪ উইকেট হারিয়েছে। বাঁ হাতি স্পিনার মিচেল স্যান্টনারের বিপক্ষে বাঁ হাতি হয়ে ব্যাট করার চেষ্টা দুবার করলেন মিচেল মার্শ। রানই পেলেন না। রেগেমেগে পরের বলে ডানহাতি হয়েই এমন ছক্কা মারলেন যেটির দূরত্ব ১০১ মিটার! দানবীয়! লেগ স্পিনার ইশ সোধি এর মধ্যে মার্শের পার্টনার গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে (২২) তুলে নিলেন। এবং শেষ ২৪ বলে ৪২ রান দরকার জিততে। চার-ছক্কা মারায় খ্যাতি আছে বলে স্পিনার অ্যাশটন অ্যাগার এসে গেলেন। এবং ১৭তম ওভারে স্যান্টনারকে মার্শ ও অ্যাগার একটি করে ছক্কা হাঁকালেন। ১৫ রান আসলো ওভারে। অস্ট্রেলিয়ার জন্য একটু সহজ হলো অবস্থা। সোধি কঠিন পরিস্থিতিতে টানা টাইট বোলিং করেছেন। এরপর ১৮তম ওভারের প্রথম বলেই পেসার মিচেল ম্যাকক্লেনাগান তুলে নিলেন মার্শকে (২৪)। ম্যাচটা এখন যে কেউ জিততে পারে। শেষ ১১ বলে ২২ রান দরকার। ম্যাকক্লেনাঘান শিকার করলেন অ্যাগারকেও (৯)। তিনিও ছিটকে দিলেন অস্ট্রেলিয়াকে! রোমাঞ্চ ধর্মশালায়। দারুণ উত্তেজনা। শেষ ওভারে ১৯ রান দরকার অস্ট্রেলিয়ার। কোরি অ্যান্ডারসনের প্রথম বলে ক্যাচ দিলেন জেমস ফকনার। একটা ছক্কা হলো। কিন্তু পঞ্চম বলে বোল্ড ন্যাথান কল্টার-নাইল! হহার দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করল অস্ট্রেলিয়া! এর আগে ৪৪ রান পর্যন্ত নিরাপদেই গেছে অস্ট্রেলিয়া। ষষ্ঠ ওভারে পেসার মিচেল ম্যাকক্লেনাঘান প্রথম আঘাত হানেন। ক্যাচ তুলে ফিরে যান শেন ওয়াটসন (১৩)। পরের ওভারে বাঁ হাতি স্পিনার মিচেল স্যান্টনার তুলে নেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথের (৬) উইকেট। মারতে গিয়ে বল মিস করে স্টাম্পিংয়ের শিকার হয়েছেন স্মিথ। হঠাৎই থমকে যায় অস্ট্রেলিয়া। টানা আঘাত হানে কিউইরা। ওপেনার উসমান খাজা (৩৮) রান আউট হলে বিপদ বাড়ে। ৪ নম্বরে ব্যাট করতে নামা ডেভিড ওয়ার্নার (৬) স্যান্টনারের কারণে দ্রুত ফিরলে বিপদে পড়ে অস্ট্রেলিয়া। ৬৬ রানে ৪ উইকেট হারানো দল হয়ে যায় তারা। এরপর মার্শ ও ম্যাক্সওয়েল ৩৪ রানের জুটি গড়লেও শেষ রক্ষা হয়নি অস্ট্রেলিয়ার। এই ম্যাচের শুরুতে রীতিমতো ঝড়ই তুলেছিল নিউজিল্যান্ড। কিন্তু প্রতিপক্ষের নাম অস্ট্রেলিয়া। যাদের সাথে আগের ৫ টি-টোয়েন্টি দেখায় কিউইদের জয় মাত্র একটিতে। শুরুর ধাক্কা তাই সামলে উঠে পাল্টা আঘাত হানে অস্ট্রেলিয়া। এরপর ধরে রাখে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ। পেসার ন্যাথান কল্টার-নাইলকে ম্যাচের প্রথম ওভারে পরপর দুই বলে দুটি বাউন্ডারি মারলেন মার্টিন গাপ্টিল। নিউজিল্যান্ডের শুরু থেকে মেরে খেলার চরিত্র তাতে স্পষ্ট। তৃতীয় ওভারে এলেন বাঁ হাতি স্পিনার অ্যাশটন অ্যাগার। তার প্রথম দুই বলে মিড উইকেটের ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকালেন গাপ্টিল। ওভারের শেষ বলে আরো একটি ছক্কা। এই ওভারে ১৮ রান নিয়ে গাপ্টিল বোঝালেন স্পিনারদেরও ক্ষমা করা হবে না। অ্যাগার পরে আর বল পাননি। লেগ স্পিনার অ্যাডাম জাম্পাও মাত্র ১ ওভার বল করতে পারলেন। অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনও মেরে খেলে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। অষ্টম ওভারের প্রথম বলে প্রথম সাফল্য পায় অস্ট্রেলিয়া। মিডিয়াম পেসার জেমস ফকনার তুলে নেন বিপজ্জনক গাপ্টিলকে (৩৯)। ৬১ রানে প্রথম উইকেটের পতন হয়। এরপর দুই ওভারে দুই উইকেট নেন অফ স্পিনার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। উইলিয়ামসনকে (২৪) তুলে নেওয়ার পর কোরি অ্যান্ডারসনকেও (৩) শিকার বানিয়েছেন তিনি। ১৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে নিউজিল্যান্ড। এবং প্রত্যেক ব্যাটসম্যানই তুলে মারতে গিয়ে ফিল্ডারের হাতে ধরা পড়েছেন। এরপর আর জুটি হয়নি কিউইদের। তাদের চাপে রেখেছেন অস্ট্রেলিয়ান বোলাররা। কলিন মুনরো ২৩ রান করেছিলেন। কিন্তু চাপের মুখে আগ্রাসী হতে পারেননি। রস টেলরেরও (১০) একই অবস্থা। উইকেট কিছুটা স্লো। তারাও ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন। উজ্জ্বল শুরুর পর উইকেট পতনের মধ্যে নিউজিল্যান্ডের রান রেটও কমেছে। সেই সাথে কমেছে বড় সংগ্রহ পাওয়ার সম্ভাবনা। কিউইদের নিচের দিকেও ঝড় তোলা ব্যাটসম্যান আছে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার নিয়ন্ত্রিত বোলিং তাদের অনেকটাই আটকে রেখেছে। শেষের দিকে বলার থাকল কেবল গ্র্যান্ট ইলিয়টের ২০ বলে ২৭। অস্ট্রেলিয়ার মিডিয়াম পেসাররা দারুণ বল করেছেন। শেন ওয়াটসন ৪ ওভারে ২২ রানে ১ উইকেট নিয়েছেন। ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে ১ উইকেট শিকার মিচেল মার্শের। ৩ ওভারে ১৮ রানে ২ উইকেট ফকনারের। স্পিনার ম্যাক্সওয়েলও ৩ ওভারে ১৮ রান দিয়েছেন। নিয়েছেন ১ উইকেট। কিন্তু নাগপুরের পর ধর্মশালায়ও বোলারদের কারণে শেষ হাসি নিউজিল্যান্ডের।

খেলাধুলা


শেয়ার